শেরপুরে শ্রীবরদীর বালিজুড়ি খ্রীস্টানপাড়া এলাকায় পাঁচ গারো আদিবাসীর ফসল কেটে ধ্বংস করার প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা ও দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে শনিবার বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস)।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বসবাসরত গারো আদিবাসীরা যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন পাহাড়ী অঞ্চলে বসবাস করে আসছে। গারো আদিবাসী যে অঞ্চলে বসবাস করে আসছে সে অঞ্চলকে তারা তাদের ভিটে মাটিসহ আশেপাশের বনাঞ্চলকে সংরক্ষণ করে আসছে। গারো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা বন ধ্বংস করে না, তারা বন সংরক্ষণ করে। এক কথায় বলা চলে তাদের বসবাসরত অঞ্চলের মাটিকে মা আর বনকে সন্তানের মত লালন-পালন করে আসছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, কতিপয় অসৎ বন কর্মকর্তা কর্মচারীর পাল্লায় পরে গারোদের বিভিন্ন সময় শত বছরের ভিটে মাটি ছাঁড়তে হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ আগস্ট শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুড়ি অঞ্চলের পাঁচ জন গারোর বাগান বনবিভাগের কতিপয় অসৎ বন কর্মকর্তা-কর্মচারী অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কেটে দিয়েছে। হাজার হাজার টাকা খরচ করে, শ্রম দিয়ে পরম যত্নে যে বাগান তৈরি করা হয়েছিলো, তা কেটে তছনছ করে ধ্বংস করা হয়ছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের কাছে সরকারি ত্রাণ পৌঁছে দিল সেনাবাহিনী
বিবৃতিতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ না দেয়া কিংবা জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় না আনা হলে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বিভিন্ন সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে বলেও জানানো হয়েছে।
গত ১২ আগস্ট শ্রীবরদী উপজেলায় বন বিভাগের বালিজুরি রেঞ্জ (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে বালিজুড়ি খ্রীস্টানপাড়া এলাকায় ভারতী মৃ, সভানী সিমসাং, সবিতা মৃ, কমলা রেমা, পয়মনি চিরানের কষ্টের আবাদকৃত সবজীর আবাদ ও সুপারি বাগানের গাছ কেটে সাবাড় করে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জুম ফসল কেটে ফেলায় রেঞ্জ কর্মকর্তার অপসারণ দাবি
বনবিভাগের তথ্যমতে, শেরপুরে সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ি, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার প্রায় ২০ হাজার একর বনভূমির মধ্যে অন্তত আড়াই হাজার একর বনের জমি অবৈধ দখলদারের কবলে রয়েছে। বনাঞ্চলের এসব জমি উদ্ধারে সম্প্রতি দখলদারদের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠিয়েছে বনবিভাগ। ওই তালিকায় প্রায় ৬ শতাধিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ দুই হাজার ব্যক্তির নাম রয়েছে।